পিসিতে ভাইরাস আক্রমণের পর সাথে সাথে করার মত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ


আপনার কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রথম কাজটিই হলো ভাইরাস মেরে ফেলা। ভাইরাস মারার পরেও অনেক কাজ থেকে যায়। আপনার এন্টিভাইরাসটি যদি কোনো ক্ষতির পূর্বেই ভাইরাস ধরে ফেলে তবে আপনি নিশ্চিন্ত কিন্তু যদি দেরী হয়ে যায় তবে আপনার জন্য বেশ ঝামেলাই অপেক্ষা করছে।

পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুনঃ
আপনি সাধারণত আপনার কম্পিউটার দিয়ে আপনার মেইল একাউন্ট, গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংক একাউন্ট এবং সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন সাইট এবং আরও অনেক গুরুত্বপুর্ণ সাইটগুলোতে লগ-ইন করে থাকেন। যখন আপনার কম্পিউটারটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তখনই উচিত আপনার এই সাইটগুলোর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলা, নচেৎ দেখা যাবে ভাইরাসগুলো বিভিন্ন থার্ড পার্টি সফট ব্যবহার করে আপনার সমস্ত একাউন্টের পাস অটো পরিবর্তন করে ফেলতে পারে আপনার অজান্তেই!

একাজটি করার জন্য প্রয়োজনে অন্য যেকোনো ভালো কম্পিউটার (যেটা ভাইরাসে আক্রান্ত নয়) দিয়ে আপনার একাউন্টগুলোতে ঢুকে পাস পরিবর্তন করে ফেলুন। এছাড়াও আপনি আপনার একাউন্টের নিরাপত্তার জন্যই কঠিন এবং ইউনিক পাসওয়ার্ড সিলেক্ট করে দেবেন। প্রয়োজনে মোবাইল ভেরিফিকেশন পাস চালু করবেন। এবং ক্রোম অথবা ফায়ারফক্স ব্রাউজারের জন্য LastPass শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন।

নিশ্চিত হোন যে ভাইরাসটি আসলেই দূর হয়েছেঃ
একবার আপনার কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে সে যা খুশী করতে পারে আপনার কম্পিউটারকে নিয়ে! উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কিছু ভাইরাস অটোমেটিক rootkit নামে এক ধরণের সফট ইন্সটল করে তার আড়ালে লুকিয়ে থাকে। অনেক ধরণের ট্রোজান ভাইরাস open the floodgates নামক আজব এক সংকেত দেবে আপনাকে কাজেই আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে ভাইরাসটি আসলেই দূর হয়েছে কীনা।

আপনি একটি মাত্র এন্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করিয়েই নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন না। আপনার উচিত হবে বেশ কয়েকটি এন্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করা, ব্যাপারটা বেশ ঝামেলার মনে হলেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্যই এটি করতে হবে। এজন্যে যে কাজটি করতে পারেন, যে ফাইলগুলো ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলো সেগুলো VirusTotal ওয়েবসাইটে আপলোড করে স্ক্যান করিয়ে নিতে পারেন, এটি Google স্বীকৃত ওয়েবসাইট। এখানে আপনি সর্বোচ্চ ৬৪ মেগার ফাইল আপলোড করতে পারবেন।
তবে সবচেয়ে ভালো হবে আপনি যদি উপযুক্ত ব্যাকাপ রেখে নতুন করে উইন্ডোজ ইন্সটলের সময় পুরো পিসি ফরম্যাট করে ফেলেন!

বের করুন ভাইরাসটি কীভাবে এসেছিলোঃ
আপনার কম্পিউটারটিকে ভাইরাসমুক্ত করার পর আপনার কাজ হবে আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও উন্নতি ঘটানো। আপনি যদি পূর্বে এন্টিভাইরাস ব্যবহার না করে থাকতেন, তবে এবার এন্টিভাইরাস চালু করুন। উইন্ডোজে ডিফল্টভাবে Windows Defender নামে একটি এন্টিভাইরাস দেয়া আছে যার কার্যকারিতা খুবই দূর্বল।

আপনি যদি ফ্রি ব্যবহার করতে চান তবে avast আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো এন্টিভাইরাস। আর কিনে ব্যবহার করতে চাইলে eset, kasparsky ব্যবহার করতে পারেন।

জাভা ব্যবহার করছেন? জাভা কম্পিউটারের নিরাপত্তার সবচেয়ে দূর্বল দিক। যদি একান্তই জাভা ব্যবহার করতে চান তবে নিদেনপক্ষে ব্রাউজারের জাভা প্লাগিন্সটা বন্ধ রাখুন। এছাড়াও ব্রাউজারের আরও অন্যান্য প্লাগিন্স চেক করে দেখুন কোনোটি পুরোনো হয়ে গেছে কীনা, তাহলে আপডেট করে ফেলুন।

আপনার অপারেটিং সিস্টেম এবং ওয়েব ব্রাউজার প্রতিনিয়ত আপডেট রাখুন। যেকোনো সফট শুধু একটার পর একটা ক্লিক দিয়ে ইন্সটল করে ফেলবেন না।

প্রতিবার ক্লিকের সময় একটু কষ্ট করে পড়ে দেখুন আপনি ঠিক কি ইন্সটল করছেন। পাইরেটেড সফটওয়্যার এড়িয়ে চলুন। আপনার মেইলের স্প্যাম বক্সে আসা কোনো ফাইল খুলতে যাবেন না, চোখ বন্ধ করে ডিলিট করে ফেলুন! 

আপনার কম্পিউটারের পোর্টে যেকারো পেন ড্রাইভ চাইলেই প্রবেশ করাতে দিবেন না। পেন ড্রাইভ খোলার আগে অবশ্যই এন্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করিয়ে নেবেন।

যদি আপনি একান্তই বের করতে নাপারেন যে ভাইরাসটি কীভাবে এসেছিলো, কারণ সবই ঠিকঠাক লাগছে আপনার কাছে, তাহলে আর বেশী কিছু করার নেই। শুধু সতর্কতা আর একটু বাড়াতে হবে।

0 comments:

Post a Comment